Vigorous Savant

ত্বকের উজ্জ্বলতা : ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ঘরোয়া উপায়।

Please Share The Post

ত্বকের উজ্জ্বলতা : ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার ঘরোয়া উপায়।

প্রাচীন কাল থেকে আজও অব্দি পর্যন্ত গায়ের রঙ নিয়ে রয়েছে মানুষের নানান চিন্তা ভাবনা। প্রত্যেকেরই কাম্য একটি ফর্সা ও সুন্দর ত্বকের। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, শারীরিক অসুস্থতা ও দীর্ঘসময় রান্নাঘরে কাজ করার মাধ্যমে আমরা হারিয়ে ফেলি আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা। আমাদের ত্বক হয়ে যায় কালচে ও বিবর্ণ রঙের। তাই কখনো রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের চাহিদা কমে না। কিন্তু আসলে কি সত্যিই এসব ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে গায়ের রং ফর্সা হয়? এ সমস্ত ক্রিম ব্যবহার করার ফলে মুখের ত্বক হয়তো কিছুটা উজ্জ্বল হয়, কিন্তু পুরো শরীরের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে ওঠে না।

তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার জন্য আপনি কিছু ঘরোয়া উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের উজ্জ্বল্য ভাব ফিরিয়ে আনতে বা বজায় রাখতে ঘরোয়া উপকরণকেই এখন সৌন্দর্য্য চর্চার প্রাধান মাধ্যম হিসেবে দেখা হচ্ছে। ত্বকের উজ্জ্বলতায় জন্য রয়েছে নানা ধরনের ঘরোয়া ফেসব্যাক।

ফর্সা, কোমল ও দাগহীন ত্বকের ঘরোয়া পদ্ধতি ত্বকের যত্নের জন্য একটু ঝামেলাকর ও সময় সাপেক্ষ মনে হলেও ত্বকের সমস্যা সমাধানে এ পদ্ধতিই বেশি কার্যকর এজন্য অনেকের কাছে এই ঘরোয়া পদ্ধতিকে ভাল লাগে। প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপদান দিয়ে আমারা ত্বক ফর্সা, কোমল ও দাগহীন করতে পারি। স্বাস্থ্য ও ত্বক উভয়ের জন্যই শসা অনেক ভাল। ত্বক ফর্সা ও দাগহীন করতে শসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । শসা বা শসার রস গ্রেড করে ত্বকে অন্ততপক্ষে ৩০-৩৫ মিনিট রেখে দিন। এটি প্রতিনিয়ত ব্যবহারে ফলে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল হয়ে যাবে।

ভিটামিন সি ত্বকের যত্নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । ভিটামিন সি এর প্রভাবে ত্বক কোমল ও ফর্সা হয় । এছাড়াও ত্বকের যত্নের জন্য আমরা কমলালেবু ব্যবহার করতে পারি কারণ কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা আপনার ত্বক কে করবে ফর্সা ও কোমল । ত্বকের যত্নের জন্য অ্যালোভেরার কোন ঝুরি নেই । অ্যালোভেরার সাথে লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করে ত্বকে ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন ফলে ত্বকের কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি মিশ্রণটি আপনার চোখের নিচের কালো দাগ ও দূর করতে সাহায্য করবে ।

টক দই ও মধুর মিশ্রণ তৈরি করে ত্বকে লাগান এতে আপনার ত্বক ফর্সা ও কোমল হবে।

কলাকে আপনি ত্বকের যত্নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। কলা আপনার ত্বককে কোমল ও স্বাস্থ্যকর করে তুলবে।

তেঁতুলের প্যাক দ্বারাও ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনা যায়। এটি খুবই সহজ এর জন্য প্রথমে আপনাকে
তেঁতুলের প্যাক ত্বকে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে পানি দ্বারা ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। অতিমাত্রায় ব্যবহার করা যাবে না সপ্তাহে ২দিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে ।

লেবু ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে মিশ্রণটি খুবই কার্যকরী। মিশ্রণটির ব্যবহার ও প্রস্তুত প্রণালী খুবই সহজ। এজন্য প্রথমে
লেবু ও মধুর ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে । এরপর ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে তাতে মিশ্রণটি লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন । প্রতিসপ্তাহে ৩-৪ দিন মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে ।

মসুর ডালের ব্যবহার : এর জন্য প্রথমে মুসুর ডাল বেশ কিছুসময় ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভেজা মুসুর ডাল ভালোভাবে বেটে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করে তা মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে পরিষ্কার করে মুখ ধুয়ে নিন।

চিনি ও লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করে ৫-৭ মিনিট ম্যাসাজ করুন এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন । প্রথমত এই মিশ্রণটি , ত্বকে স্ক্রাবারের কাজ করে মরা চামড়া দূর করবে। দ্বিতীয়ত, ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে । এছাড়া ১ চা চামচ লেবুর রসের সাথে ১ চা চামচ নারকেল তেলের একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এরপর ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে পারেন। এই মিশ্রণটিও আপনার ত্বকে চিনি ও লেবুর রসের মিশ্রণের ন্যায় কাজ করবে।

মাঝে মাঝে আমাদের হাঁটু ও কনুইয়ে কালো দাগ দেখা যায়। খুব সহজেই ঘরে বসে আমরা এই সমস্যাটি সমাধান করতে পারি। এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য
টকদই, মুসুর ডাল, লেবুর রস, চালের গুঁড়া এই চারটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি কনুই ও হাঁটুতে ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলে ময়েশ্চরাইজার লাগাতে হবে। এর ফলে কালো দাগ দূর হবে এবং হাঁটু থেকে কনুইয়ের ত্বক বেশ উজ্জ্বল দেখাবে। দইয়ের সঙ্গে ভিনিগারের মিশ্রণও চমকের ন্যায় কাজ করবে।

কালো দাগে মিশ্রণটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। বেশ কয়েকদিন ব্যবহারের ফলে পার্থক্য নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন।

দুধের সঙ্গে এক চা চামচ বেকিং সোডার মিশ্রণ তৈরি করুন । মিশ্রণটি লাগিয়ে ৫-৭ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করে ফলাফল নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন।

সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে গায়ের রং সুন্দর ও ফর্সা করার জন্য রয়েছে আরো অনেক সহজ উপায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো এই পদ্ধতিতে যে ফর্সা ও উজ্জ্বল রঙটা আপনি পাবেন সেটা হবে স্থায়ী। আর সৌন্দর্য তো সেটাই, যেটা ভেতর থেকে আসে। তবে আসুন আর বিলম্ব না করে জেনে নেওয়া যাক প্রাকৃতিকভাবে সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে রঙ ফর্সা করার আরো ২টি পদ্ধতি।

দুধ ও কাঁচা হলুদ:
অতি প্রাচীন কাল হতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চায় ক্ষেত্রে দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে। এ পদ্ধতিতে রূপচর্চার জন্য প্রতিনিয়ত এক গ্লাস উষ্ণ গরম দুধের সাথে আধা চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে পান করুন। এভাবে পান করতে সমস্যা হলে বা পান করতে না পারলে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এভাবে নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ পান করতে থাকলে আপনার রং ভেতর থেকে হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও ফর্সা।

দুধে কাঁচা হলুদ বাটা না মিশিয়ে অন্য একটি কাজ করতে পারেন। এক থেকে দেড় ইঞ্চি আকারের এক টুকরো হলুদ নিন। তারপর টুকরো টুকরো করে কেটে এক গ্লাস দুধে দিয়ে ভালো করে গরম করে নিন। দুধ গাঢ় হলুদ রঙ ধারণ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। প্রতিনিয়ত এভাবে একবার করে পান করতে থাকুন।

কাঁচা হলুদ:
শুধু দুধের সাথেই নয় বরং বাহ্যিক রূপচর্চাতেও হলুদ আপনার রঙ উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে এই পদ্ধতি ব্যপকভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কালচে ছোপ দূর করতে।

উপকরণ : লেবুর রস ১ চা চামচ, কাঁচা হলুদ বাটা ১ চা চামচ এবং দুধ ৩ চা চামচ।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
লেবুর রস, দুধ ও হলুদ বাটা একসাথে মিশ্রত করে একটি মিশ্রণ বা পেস্ট তৈরি করে নিন। সমস্ত মুখমন্ডলে এই পেস্টটি ভালভাবে লাগিয়ে প্যাকটি শুকানোর আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে তা ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন এরপর নরম তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে মুছে নিন। তবে মনে রাখবেন এটি ব্যবহারের পর গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া যাবে না এবং কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা রোদে যাওয়া যাবে না। নিয়মিত এটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের রং হয়ে উঠবে উজ্জ্বল, কোমল, ফর্সা, দাগমুক্ত ও সুন্দর। ব্যাস এভাবেই আপনি ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপায়ে সহজেই নিজ থেকে হয়ে উঠুন ফর্সা, সুন্দর।


Please Share The Post

Leave a Comment