কবি আল মাহমুদের জীবনী | Aal Mahmood Biography in Bengali

কবি আল মাহমুদের জীবনী | Aal Mahmood Biography in Bengali

কবি আল মাহমুদের জীবনী | Aal Mahmood Biography in Bengali
John
কবি আল মাহমুদের | Aal Mahmood
১১ জুলাই ১৯৩৬ – ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
মোড়াইল গ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাংলাদেশ
পেশা কবি, সম্পাদক, সাংবাদিক

মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (১১ জুলাই ১৯৩৬ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) যিনি আল মাহমুদ নামে অধিক পরিচিত, ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি।[১] তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন।[২] বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে সক্রিয় থেকে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতাকে নতুন আঙ্গিকে, চেতনায় ও বাক্‌ভঙ্গীতে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে ।[৩][৪] তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত সরকার বিরোধী সংবাদপত্র দৈনিক গণকণ্ঠ (১৯৭২-১৯৭৪) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

 

১৯৫০-এর দশকে যে কয়েকজন লেখক বাংলা ভাষা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদ, রাজনীতি, অর্থনৈতিক নিপীড়ন এবং পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে লিখেছেন

তাদের মধ্যে মাহমুদ একজন।[৫] লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৭৩), মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।[৬] কবি আল মাহমুদ তার অনবদ্য গল্প ও উপন্যাসের জন্যও খ্যতি অর্জন করেছিলেন।

জন্ম ও বাল্যকাল: আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাই স্কুলের পড়াশোনা করেন। মূলত এই সময় থেকেই তার লেখালেখির শুরু। । আল মাহমুদ বেড়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। আজীবন আত্মপ্রত্যয়ী কবি ঢাকায় আসার পর কাব্য সাধনা করে একের পর এক সাফল্য লাভ করেন।

See also  Oxford tops world university ratings

কর্মজীবন: সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরে কবি ঢাকা আসেন ১৯৫৪ সালে। সমকালীন বাংলা সাপ্তাহিক পত্র/পত্রিকার মধ্যে কবি আব্দুর রশীদ ওয়াসেকপুরী সম্পাদিত ও নাজমুল হক প্রকাশিত সাপ্তাহিক কাফেলায় লেখালেখি শুরু করেন। তিনি পাশাপাশি দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় প্রুফ রিডার হিসেবে সাংবাদিকতা জগতে পদচারণা শুরু করেন। ১৯৫৫ সাল কবি আব্দুর রশীদ ওয়াসেকপুরী কাফেলার চাকরি ছেড়ে দিলে তিনি সেখানে সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। কাব্যগ্রন্থ লোক লোকান্তর(১৯৬৩) সর্বপ্রথম তাকে স্বনামধন্য কবিদের সারিতে জায়গা করে দেয়। এরপর কালের কলস(১৯৬৬),সোনালি কাবিন(১৯৬৬), মায়াবী পর্দা দুলে উঠো(১৯৬৯) কাব্যগ্রন্থগুলো তাকে প্রথম সারির কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি গল্প লেখার দিকে মনোযোগী হন। ১৯৭৫ সালে তার প্রথম ছোটগল্প গ্রন্থ পানকৌড়ির রক্ত প্রকাশিত হয়। ১৯৯৩ সালে বের হয় তার প্রথম উপন্যাস কবি ও কোলাহল। আল মাহমুদ সাংবাদিক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং যুদ্ধের পরে দৈনিক গণকণ্ঠ নামক পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। এই পত্রিকায় সামসুদ্দিন পেয়ারা, মরহুম আসফউদ দৌলা, ফজলুল বারী প্রমুখ রিপোর্টার হিসাবে কাজ করেন। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এক বছরের জন্য একবার জেল খাটেন । পরে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু তাকে শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহপরিচালক পদে নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি পরিচালক হন। পরিচালক হিসেবে ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

সাহিত্যজীবন: ১৯৫৪ সাল অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে তার কবিতা প্রকাশ পেতে থাকে। এ সময় তিনি ঢাকা আসেন এবং পত্রিকায় কাজ নেন ও সাহিত্যে পুরোদমে মনযোগী হন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকা এবং কলকাতার নতুন সাহিত্য, চতুষ্কোণ, ময়ূখ ও কৃত্তিবাস ও বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত বিখ্যাত ‘কবিতা’ পত্রিকায় লেখালেখির সুবাদে ঢাকা-কলকাতার পাঠকদের কাছে তার নাম সুপরিচিত হয়ে ওঠে এবং তাকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়।

See also  Oxford tops world university ratings

স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততায় আঞ্চলিক শব্দের প্রয়োগ তার অনন্য কীর্তি। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র দুটি কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর সবচেয়ে সাড়া জাগানো সাহিত্যকর্ম সোনালি কাবিন। ১৯৯০-এর দশক থেকে তাঁর কবিতায় বিশ্বস্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস উৎকীর্ণ হতে থাকে; এর জন্য তিনি প্রগতিশীলদের সমালোচনার মুখোমুখি হন। তবে ঈশ্বরানুগত্যের কারণে তার কবিতার কাব্যগুণ আহত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি আদৌ।

প্রকাশিত গ্রন্থ: লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৬৬), মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো (১৯৭৬), আরব্য রজনীর রাজহাঁস, বখতিয়ারের ঘোড়া, অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না, Al Mahmud In English, দিনযাপন, দ্বিতীয় ভাঙ্গন, কবির মুখ, উপন্যাস সমগ্র-১, উপন্যাস সমগ্র-২, উপন্যাস সমগ্র-৩, তোমার গন্ধে ফুল ফুটেছে, ছায়ায় ঢাকা মায়ার পাহাড় (রূপকথা), ত্রিশেরা, উড়াল কাব্য।

মৃত্যু: হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবি আল মাহমুদ ৮২ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় মারা যান। ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতা‌লে শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *