কাকে ইসলামের ত্রাণকর্তা বলা হয় এবং কেন

আবু বাকার: ইসলাম ধর্মের ত্রাণকর্তা ও তার অবদান ইসলামের প্রতি।

আপনারা কি জানতে চান যে  কাকে ইসলামের ত্রাণকর্তা বলা হয় এবং কেন? তাহলে এই পোস্টটা  জন্যই। আবু বকর হলো ইসলাম ধর্মের প্রথম খলিফা। তিনি ৬৩২ ক্রীষ্টাব্দ থেকে ৬৩৪ ক্রীষ্টাব্দ অব্দি খলিফা ছিলেন এবং, তাকে সুন্নি মুসলিমরা আল সিদ্দিকী নামে ডাকতেন। আবু বাকার প্রথম একজন ভদ্রলোক যিনি ইসলাম ধর্মকে সসম্মানে গ্রহণ করেন, কারণ তার শশুরমশাই ছিলেন – হাজরাত মোহাম্মদ জেক বলা হয় ইসলামের প্রফেট। তিনি যখন তার শশুরমশাইয়ের সাথে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন, তখন তিনি মুশরিকীটেদের জন্য দাওয়াহ প্রচার করেছিলেন। হাজরাত মুহাম্মদ এর পর, তিনিই ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রধান প্ৰবক্তা। 

তাছাড়াও, আবু বাকার, ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রথম   ধর্মপ্রচারক,যিনি,হাজরাত মুহাম্মদ এর সাথে মেদিনা যান এবং ওখানে গিয়ে, হাজরাত মুহাম্মদ এর অনুপতিষ্ঠিতে – আমির আল হজ এর দায়িত্ব পালন করেন ৬৩১ ক্রীষ্টাব্দে। তারপর ৬৩২ কৃষ্টাব্দে তিনি প্রথম খলিফার দায়িত্ব পান, সেটা হচ্ছে একজন সাকীফ হিসেবে। যদিও তার এই পদপ্রাপ্তি খুব সোজা হয়নি, এবং তাকেও নানাবিধ যুদ্ধ, ও অন্যান্য লড়াই এর মাদ্ধমেই এগিয়ে যেতে হয়েছে – যেমন রিড্ডা যুদ্ধ বা অন্য সব। তারপরেও আরব দুনিয়ায় তার কথার মাত্রাই আলাদা, এবং সেটাকেই সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। 

এর পরের  অংশে দেয়া আছে যে উনি কিভাবে ইসলাম ধর্মের একজন প্রধান প্রবক্তা হয়ে ওঠেন এবং উনি ধর্মের জন্য কি কি করেছেন – 

আবু বাকার ইসলাম ধর্মের জন্য কি কি করেছেন? 

 

See also  প্রথম খলিফা: ওমর রা. আবু বকর রা. কে প্রথম খলিফা নির্বাচিত করতে চাইলেন।

 ইসলাম ধর্মের জন্য আবু বাকার অনেক কিছু করেছেন। তার নিরিক্ষনেই তার পরিবারের লোকেরা (এক সন্তান ছাড়া, যাকে তিনি পরে বিতাড়িত করেন), সবাই ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েছে। তাছাড়াও, তিনি বহু দাসী ও রাজার সেবকদের উদ্ধার করেছেন কারণ তাদের সঙ্গে অত্যন্ত ঘৃণ্য আচরণ করা হতো। শুধু তাই নোই, তিনি ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন দিকগুলি সবার সামনে তুলে ধরেছেন, এবং এই ধর্মের প্রতি যে লোকের ভুল ধারণা গুলো আছে সেগুলোর অবসান করতে সাহায্য করেছেন। 

দিন কে দিন, তিনি মানুষকে সবার ওপরে তুলে ধরেছেন, এবং বলেছেন যে আল্লাহ ই হলো একমাত্র পথ যা দিয়ে মানুষ আসল শান্তি ও মুক্তির পথে এগিয়ে যেতে পারেন। শুধু তাই না, তিনি এটাও বারংবার বলেছেন যে – যেদিন পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে, সেদিন আল্লাহ সবার পাপ পুণ্যের হিসেব করবেন এবং তখন সবাইকে নিজের নিজের হিসেবে দিতেই হবে। সেই কেয়ামত এর রাত এর জন্যে, তিনি সবাইকে আগে থেকে সাবধান করে দিয়েছিলেন যাতে তারা কোনো গুনাহ না করে, এবং আল্লাহর দেখানো পথেই এগিয়ে যায়। 

আবু বাকার কিভাবে মুসলিম ধর্ম প্রবর্তনে উৎসাহ দেন?

আবু বাকার মুসলিম ধর্ম কে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন। তিনি এই ধর্মের কারণে, অনেক যুদ্ধ করেছেন, যেমন বাঁদরের যুদ্ধ,  ওহুড এর যুদ্ধ, ট্রেঞ্চ এর যুদ্ধ, খায়বার এর মহাযুদ্ধ, ও তাছাড়াও অনেক। তিনি তার পথপ্রদর্শক হাজরাত মুহাম্মদ এর হয়ে অনেক মিলিটারি ক্যাম্পেইন ও সামলেছেন। তার শশুরমশাইয়ের মতোই, তার ও একটাই ইচ্ছে যে – ইসলাম ধর্ম যে আলোর রাস্তা বহুলোক কে দেখিয়েছে, সেটাই যেন আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। 

তিনি মুসলিম ধর্মের ও কোরান এর যে মূল বক্তব্য সেগুলো নিয়ে এগিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন, যে ইসলাম ধর্ম সারা পৃথিবীতে শান্তি এনে দেবে। তিনি এই শান্তিবার্তা নিয়ে – আমির আল হজ হিসেবে, ৩০০ লোক নিয়ে মেদিনা থেকে মক্কা গেছেন। তারপর হাজরাত মুহাম্মদ এর মৃত্যুর পর তিনি খলিফা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন, মুসলিম ধর্মকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। 

See also  জ্ঞানের দরজা : হযরত আলী (রা) কে জ্ঞানের দরজা বলা হয় কেন?

ইসলাম ধর্মে ও মুসলিম সমাজে, আবু বাকার এর সন্মান অশেষ। তিনি হাজার কষ্টের মধ্যে যেভাবে ইসলাম কে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, সেটা অত্যন্ত আদর্শ পথ। 

মানবজাতির ত্রাণকর্তা বলা হয় কাকে ও কেন? 

আবু বাকার কে মানবজাতির ত্রাণকর্তা এই কারণে বলা হতো যে – যখন তিনি মক্কা তে ছিলেন, তখন তিনি বহুজনকে দাসত্ব থেকে উদ্ধার করেছিলেন। তিনি চিরকালই ইসলাম ধর্মের প্রধান প্রবক্তা। তার স্ত্রী ও এক সন্তান ছাড়া বাকি সবাই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার ফলে হাজরাত মুহাম্মদ এর তিনি সবথেকে কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিতি পান। তারপর থেকেই, তিনি মক্কা তে যত গরিব, দুঃখী, ও মহিলা ছিলেন, যারা দাসত্ব করে নিজের জীবনযাপন করতেন, তাদের ইসলাম ধর্মের দিকে নিয়ে এসে মুক্তি দেন। যাদেরকে তিনি মুক্তি দেন, তাদের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম হলো – বিলাল ইব্ন রাবা (জেক তিনি ৪০,০০০ দিনার দিয়ে মুক্ত করেন)। তাছাড়াও আছে ওই লিস্ট এ – লুবায়নাঃ, হারিথাৎ বিন আল মুয়াম্মিল, আল নাদিয়াঃ, আবু ফুকায়াঃ, আবির ইব্ন ফুহাইয়া ও আরো অনেকে। 

তাকে যখন জিগেশ করা হয়, যে তিনি কেন শুধু বৃদ্ধ ও নারীদের রক্ষা করেন, তখন তিনি জানান যে তার উদ্দেশ্য শুধু এদেরকেই রক্ষা করা কারণ, এটাই আল্লাহর নির্দেশ। 

আবু বক্কর নামের অর্থ কি

 সামূহিক ভাবে আবু বাকার নাম এর মানে হচ্ছে – একটি  উট এর পিতা। এই নাম টা সুন্নি মুসলিমদের  মধ্যে অত্যন্ত প্রচলিত এবং বহুজনই এই   ব্যবহার করতেন। তবে, আবু বাকার ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় খলিফা হওয়ার পর আর কেউ ওই নামটার ব্যবহার করে না। 

ত্রাণকর্তা অর্থ কি

ত্রাণকর্তা মানে এমন একজন যিনি সবার রক্ষাকর্তা হয়ে উঠে এসেছেন হাজার বাধার মধ্যে দিয়েও। আবু বাকার ও এমন একজন যিনি এই কঠিন পথ এর মধ্যে দিয়ে চলে ইসলাম ধর্মের ত্রাণকর্তা হয়েছেন। 

See also  হযরত ওমর (রা) এর প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা।

FAQ 

Q1. আবু বাকার কে? 

আবু বাকার হলেন হাজরাত মুহাম্মদ এর জামাই। তিনি প্রথম খলিফা মুসলিম সমাজের।

Q2.আবু বাকার কি করেছেন মুসলিম ধর্মের জন্য? 

তিনি ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক, ও বহু মানুষকে দাসত্ব থেকে রক্ষা করেছেন। 

Q3. ইসলাম ধর্মের ত্রাণকর্তা কাকে বলা হয়? 

আবু বাকার কে ইসলাম ধর্মের ত্রাণকর্তা বলা হয়।