এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো
এফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমান অনলাইন ইনকামের দুনিয়াতে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি কাজের নাম। আপনি হয়তো এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সমন্ধে জানেন অথবা আরো বিস্তারিত জানার জন্য আমাদের এখানে এসেছেন। আমাদের এই পুরোলিখাটির মাধ্যমে আমরা আপনাকে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে শুরু করবেন এই সমন্ধে পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কাকে বলে
কোনো প্রতিষ্টান অথবা ব্যক্তির পণ্য বা সেবা চুক্তিভিত্তিক কমিশনে প্রচার করে বিক্রি বাড়ানোর মাধ্যমে যেই উপার্জন হয় তাকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।
প্রতিটা ব্যবসার সাথে মার্কেটিং পরিপূর্ণ ভাবে জড়িত। ব্যবসার প্রচার প্রসার অথবা বিক্রি বাড়ানোর জন্য মাৰ্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এফিলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি অংশ। কারণ এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পুর্ন্ন অনলাইন ভিত্তিক হয়ে থাকে।
মূলত অনলাইন এর মাধ্যমে অন্য কারো পণ্য অথবা অন্য কিছু বিক্রি বাড়ানোর মাধ্যমে আপনি প্রত্যেকটা পণ্য বিক্রি হওয়ার পর যেই কমিশন পেয়ে থাকেন এটাই আসলে এফিলিয়েট মার্কেটিং।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে
এফিলিয়েট মার্কেটিং মার্কেটিং কি এই সমন্ধে জানার পর আপনার নিশ্চই আগ্রহ হবে এটি কিভাবে কাজ করে। আমরা এখানে আপনাকে পরিপূর্ন ভাবে বুজানোর চেষ্টা করবো এটার কাজ সম্পর্কে।
অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য মার্কেটারদের খুঁজে থাকে। তারা পণ্য বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট কমিশন দিয়ে মার্কেটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে, যাতে প্রস্তুতকারকের পণ্যটি প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়।
পণ্য উৎপাদনকারী প্রাথমিকভাবে তার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করে বা অন্য প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট অ্যাফিলিয়েটের সাথে যুক্ত হয়। এরপর সেই মার্কেটার কে একটি ইউনিক লিংক প্রদান করা হয় যেন বিক্রি হলে কোন মার্কেটার এর মাধ্যমে হলো এটা উৎপাদনকারী অথবা প্রতিষ্ঠান বুজতে পারে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সাধারণত কয়টি পক্ষ থাকে। এইসব পক্ষরা এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এফিলিয়েট মার্কেটিং পক্ষদ্বয়:
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার- যে বেক্তি কমিশন এর আশায় পণ্য প্রচার করে থাকেন।
- বিক্রেতা- পণ্য উৎপাদনকারী অথবা বিক্রি করতে আগ্রহী ব্যক্তি।
- নেটওয়ার্ক- এফিলিয়েট মার্কেটার এবং পণ্য বিক্রেতা যেখানে এক হন এবং এর জন্য যাবতীয় কাজ এখানে নিয়ন্ত্রণ হয়।
- ক্রেতা- যারা পণ্য ক্রয় করেন অথবা ভোক্তা।
এখানের সকল পক্ষদ্বয় সমন্দ্বে আপনার বিস্তারিত জানা উচিত বলে আমরা মনে করতেছি। চলুন আমরা জেনে নেই।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হলো সেই ব্যক্তি যিনি কমিশন এর জন্য বিক্রেতার পণ্য প্রচার করার মাধ্যমে উপার্জন করে থাকেন। একজন এফিলিয়েট মার্কেটার বিভিন্ন ভাবে পণ্যের প্রচার এবং বিক্রি করিয়ে থাকে। যেমন-কোনো ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, পেইড অ্যাড এর মাধ্যমে, ইমেইল এর মাধ্যমে, ইত্যাদি।
বিক্রেতা
বিক্রেতা হলো পণ্যের উৎপাদনকারী অথবা উৎপাদনকৃত পণ্যের মদ্যসত্ব ব্যবসায়ী। বিক্রেতা পণ্য এর বিক্রি বাড়ানোর জন্য এফিলিয়েট মার্কেটারদের তার পণ্যের গুণগতমান এবং নির্ধারিত কমিশন সমন্দ্বে জানান। এফিলিয়েট মার্কেটার কমিশন এর উপর নির্ভর করে পণ্য প্রচার করে থাকেন।
নেটওয়ার্ক
বর্তমানে অনেক বড়ো প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা এফিলিয়েট মার্কেটার এবং পণ্যের বিক্রেতাকে একটি জায়গাতে আনার ব্যবস্থা করে থাকেন। এসব প্রতিষ্ঠানকে নেটওয়ার্ক বলা হয়। এসব নেটওয়ার্ক বিক্রেতার থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কমিশন নিয়ে থাকেন। তবে কিছু প্রতিষ্ঠান মার্কেটার এর থেকেও কমিশন নেয়।
ক্রেতা
যার পণ্যটি প্রয়োজন বা কেনার আগ্রহ আছে অথবা পণ্যটি ক্রয় করে সে ক্রেতা হিসেবে বিবেচিত হয়। শুদু মাত্র ক্রেতা এর উপরে নির্ভর করে উপরের সবার লাভের পরিমান। পুরো এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়মটা ক্রেতা তৈরির জন্যই হয়ে থাকে। ক্রেতা তার প্রয়োজনে অথবা এফিলিয়েট মার্কেটার এর বিজ্ঞাপনে আগ্রহী হয়ে পণ্যটি কিনে থাকে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করা যায়?
এফিলিয়েট মার্কেটার যখন পণ্য প্রচার করেন এবং সেখান থেকে পণ্য টি তার ইউনিক লিংক এর মাধ্যমে বিক্রি হলেই এফিলিয়েট মার্কেটার বিক্রি কৃত পণ্যের দামের থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমানে কমিশন পেয়ে থাকেন। পণ্য বিক্রি না হলেও একজন মার্কেটার অন্য অনেক এফিলিয়েট প্রোগ্রামের শর্ত অনুসারে উপার্জন করতে পারেন।
নিচে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার এর উপার্জনের মডেল সমন্ধে আলোচনা করা-
প্রতি পণ্য বিক্রি– এটি আসলে বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় একটি মডেল। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান চায় তাদের পণ্যটি অধিক বিক্রি করতে। তাই তারা এফিলিয়েট মার্কেটার কে পণ্য বিক্রি হলেই কমিশন দিয়ে থাকে। তবে এর থেকে আলাদা কিছু আমরা দেখতে পাই অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে।
প্রতি ক্লিক– কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা এফিলিয়েট মার্কেটারকে প্রতি ক্লিক এর মাধ্যমেই পেমেন্ট করে থাকে। তবে এই ধরণের প্রতিষ্ঠানের পরিমান কম বলে আমরা মনে করি।
প্রতি লিড– এই মডেলে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার এর মাধ্যমে পাওয়া ক্রেতা এর নাম, ইমেইল,ফোন নম্বর,জিপ কোড ইত্যাদি সংগ্রহ করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কমিশন দেয়া হয়।
পুনরাবৃত্ত কমিশন– আমরা অনেক সেবা বা পণ্য দেখতে পাই যেখানে প্রতি মাসে পেমেন্ট করার প্রয়োজন হয়। এমন কিছু প্রতিষ্টান আছে যারা এফিলিয়েট মার্কেটার এর দেয়া ক্রেতা যদি পণ্যটি পরের মাস গুলোতেও পেমেন্ট করে যায় তাহলে মার্কেটার প্রথম বারের মতো পরের মাস গুলোতেও কমিশন পেয়ে থাকে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো
এতক্ষণ আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। এখন আপনার জানা উচিত কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারবেন। একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হতে আপনাকে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার নিয়ম বুজতে হবে।
একটি এফিলিয়েট লিংক প্রমোট করার অনেক উপায় আছে. আপনার পছন্দ করা পণ্যটি কোন জায়গাতে বেশি থাকে অথবা কোন মাধ্যমে প্রচার করলে বেশি বিক্রি হতে পারে এগুলো সমন্দ্বে ভালো ধারণা রাখতে হবে। চলুন আমরা পণ্য প্রচার করার বিভিন্ন উপায়গুলো জানি-
ব্লগিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য সব থেকে জনপ্রিয় উপায় হলো ব্লগিং। কারণ ব্লগিং এর মাধ্যমে গুগল সহ অনেক সার্চ ইঞ্জিন এর থেকে এসইও করে অনেক বেশি ভিজিটর ব্লগ পোস্টে আনা যায় ফ্রীতে।
বিভিন্ন টিউটোরিয়াল, রিভিউ অথবা শিক্ষামূলক বিষয় লিখে গুগল অথবা অনেক সার্চ ইঞ্জিনে রাঙ্ক করার মাধ্যমে উক্ত ব্লগ পোস্টে থাকা এফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে পণ্য প্রচার করা হয়।
ইউটিউব
ইউটিউব এর মাধ্যমে সহজেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করা সম্ভব। ইউটিউব এর ভিডিও তৈরি করে সেই ভিডিও ডিস্ক্রিপশন এ এফিলিয়েট লিংক বসিয়ে ইনকাম করা যায়। অনেক ইউটিউবার আছেন যারা এই নিয়মে ইনকাম করে থাকেন। আপনি আগ্রহী হলে নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এর মাধ্যমে আপনি আপনার এফিলিয়েট লিংক প্রমোট করার করে এফিলিয়েট কমিশন উপার্জন করতে পারেন। বিভিন্ন জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে অনেক বেশি ভিজিটর থাকে। আপনি ফ্রি অথবা সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনার এফিলিয়েট লিংকে ভিজিটর পাঠাতে পারেন।
ইমেইল এফিলিয়েট মার্কেটিং
ইমেইল এফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো পণ্যের লিংক সহ নির্দিষ্ট ক্রেতার কাছে ইমেইল এর মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারেন।
বর্তমানে ইমেইল মার্কেটিং এর চাহিদা অনেক। কারণ এর মাধ্যমে আপনি একটি লোককে একাদিক পণ্য কিনার জন্য মেইল পাঠাতে পারেন যার মাধ্যমে অনেক বেশি বিক্রি এর আশা করা যায়।
ইনফ্লুয়েন্সার এফিলিয়েট মার্কেটিং
ইনফ্লুয়েন্সার এর মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্যের প্রচার করে বিক্রি বাড়াতে পারেন। যাদের সোশ্যাল মিডিয়া তে অনেক বেশি অনুসারী রয়েছে তাদের মাধ্যমে আপনি ইনফ্লুয়েন্সার এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। এরকম মার্কেটিং এ তুলনামূলক অনেক কম খরচ হয়ে থাকে।
কুপন সাইট
বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট গুলোতে অনেক ছাড় দিয়ে থাকে। তাই তারা কিছু নির্দিষ্ট কুপন দিয়ে থাকেন তাদের ভিজিটর দের। এসব ওয়েবসাইটে এফিলিয়েট করে তাদের দেওয়া কুপন অন্যকে দিয়ে একদিকে ক্রেতাকে সাহায্য করা হয় এবং ভালো ভাবে ইনকাম করা সম্ভব হয়।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
এফিলিয়েট মার্কেটিং সমন্দ্বে এতক্ষন অনেক বিস্তারিত জানতে পারলেন। এখন আপনার জানা উচিত আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবেন এবং এর সুবিধা গুলো কি। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা গুলো জানলে আপনার আগ্রহ আরো বাড়বে একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হওয়ার জন্য।
প্যাসিভ ইনকাম
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর উপার্জনকে প্যাসিভ ইনকাম হিসাবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। কারণ আপনার কন্টেট বানানোর উপরেই নির্ভর করে এফিলিয়েট ইনকাম। আপনি যেকোনো সময়ে আপনার ইনকাম করতে পারেন এবং প্রতি বিক্রির মাধ্যমে আপনি উপার্জন করতে থাকেন। প্রতি বিক্রির সময় আপনাকে কোথাও উপস্থিস্ত থাকার প্রয়োজন হয়না।
এই উপার্জন আপনার জন্য সবসময় নাও চলতে পারে। আপনার কাজ করার উপরে নির্ভর করে আপনার এফিলিয়েট কমিশন কত হবে। এফিলিয়েট মার্কেটিং কে প্যাসিভ ইনকাম বলা হয়।
ফ্লেক্সিবিলিটি
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে অন্য কাজের তুলনায় বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। আপনি কয়েকটি ব্লগ পোস্ট গুগলে রাঙ্ক করানোর মাধ্যমে অনেক দিন এফিলিয়েট কমিশন উপার্জন করতে পারবেন। আর এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য পোস্ট লিখা তেমন কঠিন কাজ না। আপনি নিজে লিখতে না পারলে অনেক ভালো রাইটার আছেন যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য পোস্ট লিখে থাকেন আপনি তাদের সাহায্য নিতে পারেন।
কম ঝুঁকি
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে কোনো প্রকার ঝুঁকি নিতে হবে না। কারণ আপনি পণ্য তৈরি অথবা ক্রেতার কাছে পণ্য পাঠানোর মতো কোনো ঝামেলায় পড়তে হবে না। পণ্য বিক্রি হলে আপনার লাভ হবে কিন্তু বিক্রি না হলে আপনার ক্ষতি কম হবে।
একটি পণ্য বিক্রি না হলে আপনি অন্য কোনো পণ্য খুঁজে প্রচার করতে পারবেন। তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনার জন্য তেমন বেশি ঝুঁকি নেই। আপনি চাইলে যেকোনো সময় এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলাদেশ
বাংলাদেশ থেকে অনেক কোম্পানি আছে যাদের মাধ্যমে আপনি সহজেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি এফিলিয়েট মার্কেটিং সমর্থন করে। এরকম কয়েকটি কোম্পানির নাম দেওয়া হলো-
বিডি শপ
বিডি শপ একটি অনলাইন শপিং প্রতিষ্টান। এখানে বিভিন্ন গ্যাজেট পাওয়া যায়। বিডি শপ এর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে সেখানে আপনি সংযুক্ত হয়ে তাদের পণ্য প্রচার করার মাধ্যমে এফিলিয়েট কমিশন উপার্জন করতে পারেন।
TopHostBD.com
এটি একটি ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি। এখানে এফিলিয়েট করার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ থেকেই উপার্জন করতে পারেন। এদের এফিলিয়েট কমিশন ভালো ভালোই। প্রতি বিক্রিতে আপনি ১০% অথবা তার থেকেও বেশি কমিশন পাবেন।
দারাজ এফিলিয়েট মার্কেটিং
দারাজ এক সময় এফিলিয়েট মার্কেটিং সমর্থন করতো। কিন্তু বর্তমানে দারাজ এফিলিয়েটে মার্কেটিং নিয়মটি বন্দ রেখেছে। পরবর্তীতে দারাজ এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়মটি চালু করলে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো। অথবা আপনি দারাজের ওয়েবসাইটে খোঁজ রাখতে পারেন নিয়মিত।
বাংলাদেশ এর বাহিরে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
বাংলাদেশ এর বাহিরে প্রচুর কোম্পানি এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। এসব কোম্পানির মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশের মার্কেটার দের সুযোগ দিয়ে থাকে। দেশের বাহিরের এফিলিয়েট মার্কেটিং কোম্পানি গুলো অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে থাকে এবং এদের এফিলিয়েট করার মাধ্যমে উপার্জনের পরিমান অনেক বেশি হয়।
আমাদের বাংলাদেশ সহ এশিয়ার অনেকেই এসব এফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে তাদের উপার্জন করে থাকেন। এমন জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর নাম আপনার সুবিধার জন্য দেওয়া হলো-
আমাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
আমাজন বর্তমান বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। আমাজন অনেক আগে থেকেই তাদের এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালিয়ে আসতেসে। আমাজন এর এফিলিয়েট এর মাধ্যমে আপনি অনেক বেশি উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। আমাজনে সকল ধরনের পণ্য পাওয়া যায়।
একটি ব্লগ ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আপনি আমাজন এফিলিয়েট করতে পারেন। আমাজন এফিলিয়েটে নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য আলাদা আলাদা কমিশন পাবেন। আমাজন এফিলিয়েটে কমিশন এর টাকা বাংলাদেশে আপনি পেওনিয়ারের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্ট এ আনতে পারবেন।
Jvzoo
Jvzoo এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল পন্য প্রচার করার মাধ্যমে উপার্জন করতে পারেন। Jvzoo এর থেকে উপার্জিত টাকা আপনি পেওনিয়ারের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্ট এ আনতে পারবেন।
ক্লিক ব্যাংক
ক্লিক ব্যাংক অনেক বড় একটি মার্কেট প্লেস। এখানে আপনি সব ধরণের পণ্য পেয়ে যাবেন। অনেক মার্কেটার ক্লিক ব্যাংক এর মাধ্যমে প্রুচুর উপার্জন করে থাকে। তবে বাংলাদেশে ক্লিক ব্যাংক একাউন্ট দেয়না।
Impact Radius
Impact Radius এ অনেক ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। আপনি তাদের ওয়েবসাইটে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোনো পণ্য রয়েছে কিনা। আপনার পছন্দ এর সাথে মিলে গেলে আপনি সেই পণ্যের প্রচার করার মাধ্যমে উপার্জন করতে পারেন।
Envato Themeforest
এনভাটো এবং থিমফরেস্ট এক সময় আলাদা প্রতিষ্ঠান থাকলেও তারা এখন এক হয়ে গেছে। এখানে সকল ধরণের থিম প্লাগিন সহ বিভিন্ন ডিজিটাল পণ্য রয়েছে।আপনি চাইলে তাদের এফিলিয়েট করতে পারেন।
Bluehost
Bluehost একটি জনপ্রিয় ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি। Bluehost এর এফিলিয়েট এর সাথে যুক্ত হয়ে প্রতি হোস্টিং বিক্রির মাধ্যমে ১০০ ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন।
BostonServer
Boston Server অন্য একটি হোস্টিং কোম্পানি। এরা প্রতি বিক্রিতে আপনাকে ১০% অথবা তার থেকেও বেশি কমিশন দিয়ে থাকে। আপনি সহজেই তাদের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের হোস্টিং প্রচার করার মাধ্যমে উপার্জন করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স / টিউটোরিয়াল
এফিলিয়েট মার্কেটিং বিভিন্ন ভাবে শিখতে পারেন। ইউটিউব এ আপনি অনেক ভিডিও পাবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে। তবে অনেক ভালো ভালো কোর্স এর মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং সমন্দ্বে পরিপূর্ন ভাবে শিখতে পারেন। তবে আমি আপনাকে ইউটিউবে বেশি করে এফিলিয়েট মার্কেটিং টিউটোরিয়াল দেখতে বলবো।
ভালো টিউটোরিয়াল দেখে আপনি ভালো ভাবে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবেন। তবে আপনি যদি ইউটিউব এর টিউটোরিয়াল দেখার প্রতি আগ্রহী না হন তাহলে কোর্স করতে পারেন। বাংলাদেশে অনেক ভালো মানের মার্কেটার রয়েছেন যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে কোর্স করিয়ে থাকেন।
আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কোনো একজনের কোর্সে জয়েন হয়ে এফিলিয়েট সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কাজে নামতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো
এফিলিয়েট মার্কেটিং তুলনামূলক সহজ এবং জনপ্রিয় পেশা। ভালো প্রতিষ্ঠান এর এফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনি অনেক সহজেই অনেক ভালো মানের উপার্জন করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে সারা দিন পরিশ্রম করতে হবে না। আপনি আপনার সময় অনুযায়ী যেকোনো সময়ে আপনার কাজ করতে পারবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনি একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে অনেক পণ্য প্রচার করতে পারবেন।
এসব সুবিধা সহ আপনি আপনার ক্যারিয়ার এর মাধ্যমে সহজেই গড়তে পারবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করার জন্য আপনাকে আজকেই ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল
এফিলিয়েট মার্কেটিং হালাল নাকি হারাম এটা নিয়ে অনেক মতবিরোধ রয়েছে। তবে সব থেকে গ্রহণযোগ্য মতামত হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং হালাল। অনেক ইসলামিক স্কলাররা এফিলিয়েট মার্কেটিং কে হালাল বলে অভিহিত করেছেন।
সুতরাং এফিলিয়েট মার্কেটিং হালাল নাকি হারাম এটি নিয়ে আর চিন্তা করার কিছু নেই আপনার। আপনি নিশ্চিন্তে এটি নিয়ে কাজ করতে পারেন। এটি সম্পুর্ন্ন হালাল একটি কাজ।
শেষ কথা
এফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক জনপ্রিয় এবং ভালো একটি ব্যবসা। আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার মাধ্যমে অনেক ভালো একটি ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন। আপনি যদি এটি নিয়ে আগ্রহী থাকেন তাহলে সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই শুরু করুন।
আরো জানুন: সিপিএ মার্কেটিং কি? কিভাবে শুরু করবেন CPA Marketing? বিস্তারিত জানুন