উমার (রা.)

হযরত উমার (রা.) কখন এবং কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন ? উমার (রা.) এর খিলাফতকালে মিসর বিজয় সম্পর্কে আলােচনা কর।

[et_pb_section fb_built=”1″ _builder_version=”4.4.6″ global_colors_info=”{}”][et_pb_row _builder_version=”4.4.6″ global_colors_info=”{}”][et_pb_column type=”4_4″ _builder_version=”4.4.6″ global_colors_info=”{}”][et_pb_text _builder_version=”4.9.10″ text_text_color=”#2c3e50″ text_font_size=”17px” text_line_height=”1.8em” global_colors_info=”{}”]

হযরত উমার (রা.)​ ফারুক (রা.)এর ইসলাম গ্রহণের সময় ও কারণ :

মহানবী (স) যখন মক্কার ঘরে ঘরে ইসলামের বাণী প্রচার করছিলেন তখন হযরত উমার (রা.) তখন ২৭ বছরের যুবক। তার ভগ্নি ফাতেমা ও ভগ্নিপতি সাঈদ ইসলাম গ্রহণ করায় তিনি তাদের চরম শত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। হযরত উমার (রা.) ’লিবানা’ নামে তাঁর এক বাঁদীর ইসলাম গ্রহণ করার সংবাদ জানতে পেরে তাকে ভীষণভাবে প্রহার করতে থাকেন। যখন এত অত্যাচার-উৎপীড়ন করেও উমার (রা.) একটি লোককেও ইসলাম হতে বিচ্যুত করতে পারলেন না, তখন তার ক্রোধাগ্নি আরো জ্বলে উঠে। তিনি ইসলাম প্রচারক হযরত মুহাম্মদ (স) কে হত্যা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন। তিনি হযরত মুহাম্মদ -এর সন্ধানে তরবারি হতে বের হলেন। রাস্তায় ঘটনাক্রমে নাঈম ইবনে আব্দুল্লাহর সাথে তার দেখা হলো। নাঈম ওমরের হাবভাব দেখে কুশল জিজ্ঞেস করলেন। উত্তরে তিনি বললেন, মুহাম্মদকে হত্যা করার জন্য চললাম । নাঈম বললেন, আরে ভাই, আগে আপন ঘর সামলাও। তোমার বোন ও ভাগ্নপিততে মুসলমান হয়ে গেছে। হুঙ্কার ছেড়ে উমার (রা.) তৎক্ষণাৎ ভগ্নিপতির বাড়ির দিকে ছুটলেন। তাঁর ভগ্নি ফাতেমা তখন কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন। ওমরের আভাস পেতেই তিনি নীরব হয়ে গেলেন। লুকিয়ে ফেললেন কুরআনের পাতাগুলো; কিন্তু কুরআনের বাণী ওমর স্পষ্টই শুনে ফেলেছিলেন। তিনি ভগ্নিকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি পড়ছিলে? ভগ্নি বললেন, কিছুই তো না । উত্তেজিত হয়ে উমার (রা.) বললেন, গোপন করলে কি হবে? আমি জানতে পেরেছি, তোমরা উভয়েই নাকি পিতৃধর্ম ত্যাগ করেছ। ধর্ম ত্যাগের মজা আজ তোদেরকে দেখাব। তিনি এ বলেই ভগ্নিপতিকে প্রহার করতে আরম্ভ করলেন। তার ভগ্নিও স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হলেন এবং তার দেহ রক্তাক্ত হয়ে গেল। এ অবস্থায়ই তিনি বলতে লাগলেন- ভাই! তোমার যা ইচ্ছা করতে পার, অন্তর হতে ইসলাম কিছুতেই বের হবে না। ওমরের অন্তরে ভগ্নির এরূপ তেজোদ্দীপ্ত উক্তিতে দাগ কাটল। একটু নম্র স্বরে তিনি বললেন, ফাতেমা! তুমি যা পড়ছিলে তা আমাকে শুনাও। ফাতিমা (রা.) বললেন, তুমি মুশরিক অপবিত্র অপবিত্রাবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা যায় না। অতঃপর ওমর (রা.) গোসল করে আসলে ওমরের হাতে হযরত ফাতিমা (রা.) কুরআনের অংশটি দিলেন। তিনি তখন সূরা হাদীদ পড়ছিলেন “سبح لله ما في ااسمؤات و الارض و هو العزيز الحكيم” “আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সমস্ত আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে, তিনি। মহাপরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী।” এ আয়াতটি হতে তিনি সম্মুখের দিকে অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে যাচ্ছিলেন। আর ওমরের মর্মে প্রতিটি বাণী আঘাত করছিল। যখন পড়তে পড়তে তিনি এ আয়াতে পৌছলেন- امنوا بالله و رسوله তখন স্বেচ্ছায় ওমর বলে। উঠলেন- আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। এরপর তিনি রাসূল ” -এর দরবারে গিয়ে ঈমানের ঘোষণা প্রদান করেন। ইসলামের ইতিহাসে বীরশ্রেষ্ঠ উমার (রা.) এর ইসলাম গ্রহণ এক নতুন অধ্যায়ের সূত্রপাত করল। মাত্র ৪০ জন লোক তখন পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। মুসলমানগণ উমার (রা.) ইসলাম গ্রহণ করার পর প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে আরম্ভ করেন। মহানবী (স) এ সময় তাকে “ফারুক” উপাধিতে ভূষিত করেন। যেহেতু তার কারণে কুফর ও ইসলামের মধ্যে প্রকাশ্য পার্থক্য সৃষ্টি হয়।

See also  'শবে কদর' এর ফজিলত ও আমল

 

মিসর (আফ্রিকা) বিজয়:

মিসর রাজনৈতক দিক হতে রোমের কায়সারের অধীন ছিল। মুকাওকাশ থাকার প্রশাসক ছিল । কিবতীদের সে পার্থিব ও ধর্মীয় নেতা ছিল । ইসলাম গ্রহণের পূর্বে হযরত আমর ইবনে আস (রা.) মিসর ভ্রমণ করেছিলেন। তাই মিসর আক্রমণের প্রতি তার গভীর ঝোক ছিল। তিনি অষ্টাদশ হিজরতে হযরত ফারুকে আযম (রা.) হতে অনুমতি নিয়ে চার সহস্র সৈন্য সহ মিসর আক্রমণ করেন। পথিমধ্যে ফারমা, বালাসি, উম্মে ওয়াননি প্রভৃতি অঞ্চল করতলগত করে ফুসতাত-এর নিকটবর্তী দুর্গ অবরোধ করলেন। সামরিক সাহায্য প্রয়োজন মনে করে আরো দশ সহস্র সৈন্য প্রার্থনা করে তিনি হযরত উমার (রা.)-কে লিখলেন। হযরত উমার (রা.) আরো দশ সহস্র সৈন্য চারজন অধিনায়ক- যুবায়ের ইবনুল আওয়াম, ওবাদা ইবনে সামিত, মিকদাদ ইবনে ওমর এবং সালমা ইবনে মাখলাদের অধীনে প্রেরণ করেন। হযরত যোবায়ের (রা.) -এর অসীম সাহসিকতায় দীর্ঘ সাত মাস অবরোধের পর উনবিংশ হিজরিতে দুর্গটি দখল করেন এবং মুকাওকাশের সেনাবাহিনী পরাজয় বরণ করে। এরপর ইসলামি বাহিনী বিংশ হিজরিতে আলেকজান্দ্রিয়ার দিকে অগ্রসর হলে খ্রিস্টান ও রোমানদের সাথে ভয়ানক যুদ্ধ হয়। রোমানরা এ যুদ্ধে পরাজিত হলে ইসলামি বাহিনী অতি সহজেই আলেকজান্দ্রিয়া দখল করে নেয় ।সারা মিসরে আলেকজান্দ্রিয়া বিজয়ের পর ইসলামের প্রভাব বেড়ে যায়। স্বেচ্ছায় খ্রিস্টানরা ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে এবং অবশিষ্টরা জিযিয়া দিতে বাধ্য হয়।

[/et_pb_text][/et_pb_column][/et_pb_row][/et_pb_section]

5 thoughts on “হযরত উমার (রা.) কখন এবং কিভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন ? উমার (রা.) এর খিলাফতকালে মিসর বিজয় সম্পর্কে আলােচনা কর।”

  1. Pingback: حديث (হাদিস) এর সংজ্ঞা দাও। الحديث - الخبر- الأثر এর মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর। -

  2. Pingback: মহানবী (সা.) এর নবুওয়াতের অভিষেক দিবস। - Vigorous Savant is an E-Learning Shop

  3. Pingback: মহানবী (সা.) এর নবুওয়াতের অভিষেক দিবস। Islamic History

  4. Pingback: Time Management and Value of Time in our crucial life.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *