battle of riddah

battle of riddah: ‘রিদ্দা যুদ্ধ’ বলতে কি বুঝ? রিদ্দা যুদ্ধের কারণসমূহ ও ফলাফল।

[et_pb_section fb_built=”1″ _builder_version=”4.4.6″ global_colors_info=”{}”][et_pb_row _builder_version=”4.4.6″ global_colors_info=”{}”][et_pb_column type=”4_4″ _builder_version=”4.4.6″ global_colors_info=”{}”][et_pb_text _builder_version=”4.9.10″ text_text_color=”#000000″ text_font_size=”17px” text_line_height=”1.8em” text_font_size_tablet=”” text_font_size_phone=”” text_font_size_last_edited=”on|desktop” global_colors_info=”{}”]

উপস্থাপনা: (battle of riddah): ইসলাম প্রচারের প্রথম দিকে মুসলমানদের সংখ্যা সীমিত ছিল। মহানবী (স)-এর ওফাতের কিছুদিন পূর্ব থেকে দলে দলে আরববাসী ইসলামগ্রহণ করে। এ নবদীক্ষিত মুসলমানগণ বেশি দিন ধরে মহানবী (স)-এর প্রত্যক্ষ কর্ম দেখার সুযোগ পায়নি। মক্কা বিজয়ের পর ইসলামগ্রহণকারী এসব লোকের ইসলামের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের চেয়ে রাজনৈতিক সুবিধা লাভই ছিল অন্যতম লক্ষ্য। ফলে মহানবী (স)-এর ওফাতের পর সহজেই সুযোগসন্ধানী এবং ভণ্ডনবীদের প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে তারা পূর্বতন উচ্ছঙ্খল জীবনে ফিরে যেতে থাকে। ইসলামের ইতিহাসে একেই রিদ্দার যুদ্ধ বলা হয়। হযরত আবু বকর (রা) তাঁর স্বল্পকালীন খেলাফতের বেশির ভাগ সময়ে এ যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন। তাই ঐতিহাসিক হিট্টি বলেন- The short khilafat of Abu Bakar was mostly occupied with the so called Ridda wars.

( battle of riddah )- রিদ্দার যুদ্ধের পরিচয় :

( battle of riddah )- রিদ্দা শব্দটি আরবি, যার অর্থ ফিরে যাওয়া, প্রত্যাবর্তন করা। সুতরাং রিদ্দা বলতে কৃত্রিম ধর্মপ্রবর্তক এবং তাদের অনুগামীদের ইসলাম ত্যাগ ও বিদ্রোহ বোঝায় ! মহানবী (স)-এর ওফাতের পর ভণ্ডনবীদের প্ররোচনায় এ শ্রেণির লোক ইসলাম ত্যাগ করে পুনরায় পৌত্তলিক ধর্মে ফিরে যাওয়ার তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে । ইসলামের ইতিহাসে এ আন্দোলন রিদ্দা বা স্বধর্মত্যাগ আন্দোলন নামে পরিচিত। আর স্বধর্মত্যাগীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের যুদ্ধকে রিদ্দার যুদ্ধ বলা হয়।

হযরত আবু বকর (রা.) যেভাবে তার (battle of riddah) মােকাবিলা করেছিলেন:

 ১. ভণ্ডনবীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ :

ঐতিহাসিক হিট্টি বলেন, হযরত আবু বকর (রা) ভণ্ডনবীদের দমন করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি হযরত ওসমান (রা)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীকে ১১টি ভাগে বিভক্ত করে তাদেরকে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে নিয়োগ করেন।

২. আসওয়াদ আনাসীকে দমন :

বিত্তশালী গোত্রপতি আসওয়াদ আনাসী ইয়েমেনে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ ঘোষণা করলে হযরত আবু বকর (রা) তাকেসহ তার অনুগত বিদ্রোহীদের পরাজিত করেন, আসওয়াদ পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে।

৩. তোলায়হাকে দমন :

হযরত আবু বকর (রা) সেনাপতি খালেদ (রা)-কে তোলায়হার

বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। তোলায়হা বিদ্রোহ ত্যাগ করে ইসলামে প্রত্যাবর্তন করেন। পরবর্তীকালে তোলায়হা ইসলামের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

৪. মুসায়লামাকে দমন :

ভণ্ডনবীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিল মুসায়লামা। হযরত আবু বকর (রা) খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর সে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ পরিচালনা করলে তাকে হত্যা করা হয়।

৫. সাজাহর বিদ্রোহ দমন:

সাজাহ নামে এক খ্রিস্টান নারী নিজেকে নবী বলে দাবি করে। স্বীয় সৌন্দর্যের জন্য সে কতিপয় গোত্রের সমর্থন পায়, কিন্তু হযরত আবু বকর (রা)  তার বিরুদ্ধে মুসলিম বাহিনী প্রেরণ করলে সে পরাজিত হয়।

৬. যাকাতবিরোধীদের সাথে যুদ্ধ:

পরবর্তী পর্যায়ে হযরত আবু বকর (রা) যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বিভিন্ন রণাঙ্গনে তাদের সাথে। মুসলিম বাহিনীর যুদ্ধ হয় এবং তাদের নেতা হাব্বান পরাজিত হয়ে শোচনীয়ভাবে। নিহত হয়। এর ফলে তাদের বিদ্রোহও স্তিমিত হয়ে যায়।

( battle of riddah )- রিদ্দা যুদ্ধের কারণসমূহ :

 ১. ইসলাম প্রচারে বিঘ্ন :

ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, হযরত মুহাম্মদ জীবদ্দশায় আরব উপদ্বীপের মোট একতৃতীয়াংশ লোকও ইসলামে দীক্ষা লাভ দীর্ঘকাল যুদ্ধবিগ্রহে ব্যস্ত থাকাসহ বিভিন্ন কারণে মুহাম্মদ (স) সমগ্র আরব ইসলামের ছায়াতলে আনতে পারেননি।

See also  'শবে কদর' এর ফজিলত ও আমল

২. উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব :

সেযুগে যোগাযোগ  ব্যবস্থা উন্নত ছিল না, ফলে রাষ্ট্রের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে দ্রুত যাযোগাযোগ  অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। এমতাবস্থায় ধর্মত্যাগীরা এ সুযোগ গ্রহণ করে এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ইসলামকে ধ্বংস করতে সংকল্পবদ্ধ হয়।

৩. মদিনায় মুসলিম প্রাধান্যে ঈষা :

ঐতিহাসিক মুইর বলেন, মহানবী (স) মদিনা শহরকেন্দ্রিক ইসলামের প্রসার ঘটিয়েছিলেন। মদিনা ছিল ইসলামী রাষ্ট্রের বাজধানী মদিনার এ প্রাধান্যে আরবের অন্যান্য এলাকার লোকজন ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে।

  1. সুসংবদ্ধ প্রচারের অভাব : সময়ের অভাবে হযরত মুহাম্মদ (স) ব্যাপকভাবে সসস | প্রচারের ব্যবস্থা করতে না পারায় ইসলাম ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করতে পারেনি।

৫. স্বার্থবাদী মহলের লিপ্সা :

অনেকেই মনে করেছিল, নবুয়ত হলো অর্থবিত্ত ও প্রভাব প্রতিপত্তি এবং সামাজিক মর্যাদা লাভের উৎকৃষ্ট মাধ্যম। তাই অর্থনৈতিক লিপ্সার কারণে স্বার্থবাদী কিছুসংখ্যক লোক নবুয়ত দাবি করে। তাদের মধ্যে মুসায়লামাতুল কাযযাব, সাজাহ ও তুলাইহা প্রধান।

৬ ইহুদিদের ষড়যন্ত্র :

’মাকাইদুল ইয়াহুদিয়াহ’ নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে, মহানবী (স) মদিনায় আগমনের কারণে মদিনায় বসবাসকারী ইহুদিদের নেতৃত্ব লাভের দীর্ঘ দিনের আশা অপূর্ণ রয়ে যায়। রাসূলের ওফাতের সাথে সাথে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে।

৭. খ্রিস্টানদের ষড়যন্ত্র :

খ্রিস্টানদের ষড়যন্ত্রও রিদ্দা যুদ্ধের অন্যতম কারণ। কেননা এরা আরব উপদ্বীপে ইসলামের প্রাধান্য মোটেই সহ্য করতে পারেনি। তাদের উসকানি, বিভ্রান্তিকর প্রচারণা, প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রের ফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে।

৮. গোত্রপ্রীতি :

ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, তখনকার আরববাসী তাদের গোত্রপতিকে অন্ধের মতো অনুসরণ করতো। কোনো দলপতি ইসলামে দীক্ষিত হলেই মনে করা হতো প্রকারান্তরে সে গোত্রের সকল সদস্য ইসলামগ্রহণ করেছে। তাই গোত্রপতিদের ইসলাম ত্যাগের সাথে সাথে তারাও ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

৯. মহানবী (স)-এর সাহচর্য থেকে বঞ্চিত হওয়া :

মহানবী (স)-এর ওফাতের কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক লোক ইসলাম কবুল করেছিল। ফলে তারা সময় সুযোগের অভাবে কাঙ্ক্ষিত নৈতিক মানে উন্নীত হতে পারেনি। তাই তারা ইসলাম অস্বীকার করে বসে।

১০. ইসলামের মর্মবাণী অনুধাবনে ব্যর্থতা :

ঐতিহাসিক বার্নাড শ’লুই বলেন, ইসলামের আদর্শিক ও রাজনৈতিক প্রভাবে মানুষ দলে দলে ইসলামগ্রহণ করলেও স্বল্প সময়ে তারা ইসলামের গভীর মর্মবাণী উপলব্ধি করতে পারেনি। ফলে বিভিন্ন বিষয়ের গুরুত্ব তাদের নিকট প্রাধান্য পায়নি।

১১. বিশ্বাসের অভাব :

খাটি বিশ্বাসের অভাবে অনেকেই ইসলামের সাম্য, মৈত্রী, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ উপলব্ধি করতে পারেনি; বরং তারা গোত্রেপতিকে অনুসরণ করতো। ফলে মহানবী (স)-এর ওফাতের পর গোত্রপতিরা ইসলাম ত্যাগ করলে গোত্রের লোকেরাও দলে দলে ইসলাম ত্যাগ করতে শুরু করে এবং ইসলামবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলে।

১২. ভৈাগোলিক প্রভাব :

ভৌগোলিক প্রভাবে আরবদের মন মস্তিষ্ক সুষ্ঠভাবে বিকাশ লাভ করেনি। ফলে বিচার বুদ্ধি তাদের কম ছিল। তারা অনেকেই প্রথমে বিনা বিচারে চিন্তায় ইসলামেরগ্রহণ করেন। পরে অস্থির ও খেয়ালী মনের দ্বারা পরিচালিত হয়ে এর বিরুদ্ধে দন্ডায়মান হয়।

১৩. বৈপ্লবিক পরিবর্তনের বিরোধিতা :

হযরত মুহাম্মদ (স) জাহেলী যুগের ঘৃণ্য খত প্রথাগুলো নিশ্চিহ্ন করে আরব ভূখণ্ডে সমাজনীতি, ধর্ম, রাজনীতি, গোত্রনীতি,

অর্থনীতি, সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে এক আমূল বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেন। কিন্তু। নবী (স)-এর ওফাতের পর আরব ভূখণ্ডের বিভিন্ন স্থানে থাকার অধিবাসীরা ইসলামের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করে। এর কারণ ইসলামের সংস্কারমূলক ব্যবস্থা তাদের চরিত্রে কোনো রেখাপাত করেনি।

See also  ঈদে মিলাদুন্নবী ‘র প্রকৃত ইতিহাস।

১৪. নৈতিক অনুশাসনের বিরুদ্ধাচরণ :

মুক্ত স্বাধীনচেতা আরববাসীরা ইসলামের নৈতিক অনশাসন এবং রুচিসম্মত মার্জিত জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত ছিল না। চিরদিনই তারা ছিল দুরন্ত ও বাধা-বন্ধনহীন। ইসলামের বিধিব্যবস্থা এবং নৈতিক শৃঙ্খলাকে তারা ব্যক্তিস্বাধীনতার অন্তরায় মনে করতো। যতদিন মহানবী (স) জীবিত ছিলেন ততদিন তারা মাথা উঁচু করতে সাহস করেনি। কিন্তু তাঁর ওফাতের পর তারা পূর্বের ঘৃণ্য অসংযত জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে উদ্যত হয়।

১৫. যাকাত প্রদানে অস্বীকৃতি:

আবু বকর (রা)-এর খেলাফতকালে আরবের বিভিন্ন গোত্রের লোকেরা বাধ্যতামূলক যাকাত প্রদানকে তাদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র ও স্বাধীনতায়। হস্তক্ষেপ বলে মনে করতো। ইতঃপূর্বে কোনো সরকারকে তারা যাকাত প্রদান করেনি এবং এতে অভ্যস্তও ছিল না। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই তারা এ নতুন ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাই বিত্তশালী বেদুইন এবং ভণ্ডনবীরা যাকাত দিতে অস্বীকার করে। ফলে রিদ্দার যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে।

( battle of riddah )- রিদ্দা যুদ্ধের ফলাফল :

১. সুদূরপ্রসারী বিজয় :

ইসলামের ইতিহাসে রিদ্দা যুদ্ধের ফলাফল ছিল খুবই সুদূরপ্রসারী এবং গুরুত্বপূর্ণ। এ গুরুত্ব উপলব্ধি করে ঐতিহাসিক পি. কে হিট্টি বলেন- Arabia had to conquer it self before it could conquer the world. অর্থাৎ, বিশ্বজয়ের পূর্বে আরববাসীকে প্রথম আরব দেশকেই জয় করতে হয়েছিল।

২. বিপর্যয় রোধ :

রিদ্দা যুদ্ধের ফলে ইসলামের গতি স্তিমিত হয়ে পড়ে। সর্বাত্মক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। এ যুদ্ধে বিজয়ের ফলে সে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি রোধ হয় এবং ইসলামের সম্প্রসারণ গতি অব্যাহত থাকে।

৩. ইসলামের শক্তি বৃদ্ধি :

ঐতিহাসিক জোসেফ হেল বলেন, রিদ্দার যুদ্ধে বিজয়ের ফলে। বিদ্রোহী আরব গোত্রগুলো পুনরায় ইসলামের বশ্যতা স্বীকার করে এবং সমগ্র আরবে ইসলামের আধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।

৪.ভণ্ডনবীদের ধ্বংস :

অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা বজায় থাকলে মুসলমানগণ কখনো ইসলাম বিস্তারে সফলতা লাভ করতে পারত না। বিদ্রোহ দমনে মুসলিম পতিগণ আত্মবিশ্বাস, রণকৌশল এবং উচ্চতর সাংগঠনিক মেধার পরিচয় দিয়েছিলেন। ফলে ভণ্ডনবীদের ধ্বংস করা সম্ভব হয়।

৫. মিথ্যার ওপর সত্যের জয় :

রিদ্দার যুদ্ধে জয়লাভ মূলত অমুসলিমদের ওপর মুসলিমদের এবং মিথ্যার ওপর সত্যের জয়। যেমন কুরআন মাজীদে এসেছে-  সত্য এসেছে, অসত্য দূর হয়েছে, নিশ্চয় অসত্য দূরীভূত হওয়ার বিষয়।

৬. পৌত্তলিকতার অবসান :

এ যুদ্ধে জয়লাভের ফলে আরব ভূখণ্ডে ইসলাম পুনরায় পৌত্তলিকতার হাত থেকে রক্ষা পায় এবং মূর্তিপূজক, বিধর্মী, আল্লাহদ্রোহীরা ইসলামের অজেয় শক্তিতে বিচলিত হয়ে পড়ে।

৭. ইসলামের ভিত্তি সুদৃঢ় হয় :

ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেন, রিদ্দার যুদ্ধে বিজয়ের ফলে আরব উপদ্বীপে ইসলামের ভিত্তি সুপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর স্থায়িত্বের বুনিয়াদ দৃঢ় | হয়। ইসলামের শক্তি বহির্বিশ্বে আল্লাহদ্রোহীদের আতঙ্কিত করে তোলে।

 ৮. মুসলমানদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি :

রিদ্দা যুদ্ধের ফলে স্বজন হারানোর কঠিন অবস্থার ভিতর দিয়ে সত্য উপলব্ধি করা সহজ হয়। মুসলিম মনে ইসলাম সম্পর্কে গভীর। বিশ্বাসের সৃষ্টি হয় এবং মুসলমানগণ অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন।

৯. শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠন :

এ যুদ্ধে জয়লাভের ফলে শিশু ইসলামী রাষ্ট্র একটি শক্তিশালীরাষ্ট্রে পরিণত হয়। যে রাষ্ট্রের ভিত্তি মহানবী (স) নিজ হাতে স্থাপন করেছিলেন, তা হযরত আবু বকর (রা)-এর হাতে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

See also  সিফফিনের যুদ্ধ: হযরত আলী (রা.) ও মু'আবিয়া (রা.) এর মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ।

১০. গভীর আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি :

ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, রিদ্দার যুদ্ধে জয়লাভের ফলে বিদ্রোহী গোত্রগুলো পুনরায় ইসলামে দীক্ষিত হলে মুসলমানদের যে আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়, তা ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।

১১. ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি : ভণ্ডনবীদের চক্রান্ত ও তৎপরতায় কিছু সময়ের জন্য হলেও মুসলমানদের ঈমানী দুর্বলতা সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু রিদ্দার যুদ্ধে জয়লাভ করার ফলে মুসলমানদের ঈমানী শক্তি মযবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

১২. বিশ্ব বিজয়ের দ্বার উন্মুক্ত :

রিদ্দার যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ইসলাম দ্রুতগতিতে আরব জাহানের বাইরেও বিস্তার লাভ করতে থাকে, যা ভবিষ্যৎ বিশ্ব বিজয়ের দ্বার উন্মুক্ত করে। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ওয়াট বলেন, সামরিক শক্তি হিসেবে ইসলাম সর্বপ্রথম রিদ্দা যুদ্ধেই সুপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীকালে বহির্বিশ্ব জয়ের প্রধান সহায়ক শক্তিতে পরিণত হয়।

১৩. পারস্য সাম্রাজ্য জয় : ইসলামত্যাগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পারস্যের রাজশক্তি ও জনশক্তি ইসলামের বিরোধিতা করে। তারা সরাসরি ইসলামূত্যাগীদের সাহায্য করলে হযরত আবু বকর (রা) এর প্রতিশোধ নিতে বাধ্য হন এবং রিদ্দার যুদ্ধের পর অগ্নি উপাসক পারসিকদের পদানত করেন।

১৪. রোমান সাম্রাজ্য জয় : রিদ্দা যুদ্ধের সময়ে রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানরাও বিদ্রোহীদের। নানাভাবে সাহায্য করেছিল। তাই পরবর্তী খলিফাগণ রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থেই। তাদের সাথে যুদ্ধ করে সেদেশে ইসলামের বিজয় কেতন উড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন।

১৫. দুর্বল শত্রুরাও স্তব্ধ হয় :

ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, রিদ্দার যুদ্ধে মুসলমানদের জয়লাভের ফলে স্বদেশে বিদেশে ইসলামের দুর্বল ও ক্ষুদ্র শক্তিগুলো ভীতসন্ত্রস্ত এবং স্তব্ধ হয়ে পড়ে।

১৬. সামরিক নেতার আবির্ভাব :

( battle of riddah )- রিদ্দার যুদ্ধে ইসলামের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ সমরনায়ক খালেদ ইবনুল ওয়ালিদের অবদান অনস্বীকার্য। উহুদের যুদ্ধে সলমানদের বিরুদ্ধে খালেদ অসি ধারণ করলেও পরবর্তীকালে ইসলামগ্রহণ করে মুতার যুদ্ধে মুসলমানদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেন। তার অভূতপূর্ব যুদ্ধ-কৌশল, দক্ষতা, তেজস্বিতার ফলেই ভণ্ডনবীদের নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল। ভন ক্রেমার বলেন, “খালেদের অসীম তেজস্বিতা এবং আবু বকরের বুদ্ধিমত্তা না হলে রিদ্দার যুদ্ধে ইসলামের শত্রুরাই জয় লাভ করতো।”

১৭. ধর্মীয় ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা :

( battle of riddah )-রিদ্দার যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় না হলে ইসলাম হয়তো চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যেত। এ সম্পর্কে মুর বলেন, এতে পরাজয় ইসলামের পক্ষে যেমন হতো মারাত্মক, তেমনি বিজয় ছিল গতি পরিবর্তনশীল।

১৮. অর্থনৈতিক গুরুত্ব : ঐতিহাসিক খোদাবখশ বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও রিদ্দা যুদ্ধের ( battle of riddah )-  ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। যাকাত অস্বীকারকারীদের কঠোর হস্তে দমন করায় মদিনা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় হয়। যাকাত ও অন্যান্য রাজস্ব সঠিকভাবে আদায় |হওয়ায় রাষ্ট্রীয় বায়তুলমালের আয় বৃদ্ধি পায়; ফলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হয়।

উপসংহার : খলিফা হযরত আবু বকরের শাসনামলে রিদ্দার যুদ্ধ একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। তাঁর অভূতপূর্ব যুদ্ধকৌশল, দক্ষতা, তেজস্বিতা এবং সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলে মদিনার শিশু ইসলামী রাষ্ট্র দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা পায়। তাঁর প্রশংসায় ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেন But for Abu Bakar Islam would have milted away incompromise with the Bed a win tribes, or like liarstill have perished in the throse of birth.

 

 

 

[/et_pb_text][/et_pb_column][/et_pb_row][/et_pb_section]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *